
নারায়ণগঞ্জ রূপগঞ্জে সজীব গ্রুপের হাশেম ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেডের কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নিহতদের পরিবারকে ২৫ হাজার ও আহতদের ১০ হাজার টাকা করে ক্ষতিপূরণ দিবে বলে জানিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক। কারখানার ধ্বংসস্তূপ থেকে উদ্ধার করা মরদেহ ঢাকা মেডিকেলের মর্গে রাখার পর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক শামীম বেপারী সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
শামীম বেপারী বলেন, ‘যেহেতু মরদেহগুলো পুড়ে গেছে, তাই ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে পরিচয় শনাক্ত করা হবে। পরিচয় শনাক্তের পর নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে নিহতের পরিবারকে ২৫ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ দেয়া হবে। আর যারা আহত হয়েছেন তাদেরকে ১০ হাজার টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেয়া হবে।
৯ জুলাই শুক্রবার বিকেল ৩ টার দিকে ৫টি অ্যাম্বুলেন্স করে কারখানার ধ্বংসস্তুপ থেকে উদ্ধার করা মরদেহগুলো ঢাকা মেডিকেলের মর্গে নিয়ে আসা হয়।৮ জুলাই, বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে ওই কারখানা ভবনের নিচতলায় আগুন লাগে। মুহূর্তেই আগুন ভবনের অন্যান্য তলায় ছড়িয়ে পড়ে। আতঙ্কে শ্রমিকরা ভবনের ছাদে জড়ো হন। ছাদসহ বিভিন্ন তলা থেকে লাফিয়ে পড়েন অনেকে।
এতে ওই রাতেই তিনজনের মৃত্যুর খবর জানানো হয়, আহতও হন অসংখ্য শ্রমিক।ভবনের চতুর্থ তলায় ললিপপ, তরল চকলেট, তৃতীয় তলায় অরগানিক পানীয় (জুস, লাচ্ছি), দোতলায় টোস্ট বিস্কুট, বিভিন্ন ধরনের পানীয় এবং নিচতলায় বাক্স ও পলিথিন তৈরির কারখানা ছিল। পঞ্চমতলার একপাশে সেমাই, সেমাই ভাজার তেল, পলিথিন; অপর পাশে কারখানার গুদাম ছিল। কারখানার ষষ্ঠতলায় ছিল কার্টনের গুদাম। টানা ১৮ ঘণ্টা ধরে আগুন জ্বলতে থাকায় ভবনটিতে ফাটলও দেখা দেয়।
এর আগে নারায়ণগঞ্জে ঘটনাস্থলে সাংবাদিকদের ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স নারায়ণগঞ্জ অফিসের উপ-সহকারী পরিচালক আব্দুল্লাহ আল আরেফীন ৪৯ মৃতদেহ উদ্ধার তথ্য জানান। তিনি বলেন, ‘পাঁচটি অ্যাম্বুলেন্সে করে আমরা ৪৯ জনের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে পাঠিয়েছি।ওই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় কারখানা ভবন থেকে লাফিয়ে পড়ে ওই সময় তিনজনের মৃত্যু হয়। আজ শুক্রবার মেডিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় অগ্নিদগ্ধ আরো তিন জনের মৃত্যু হয়।
এই নিয়ে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে ৫৫ জনে দাড়ালো।ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা জানান, আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার পর ছয়তলা ভবনের চতুর্থতলা পর্যন্ত প্রবেশ করা গেছে। সেখান থেকেই এসব মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ছয়তলা কারখানা ভবনের ওপরের দুই ফ্লোরে এখনো আগুন জ্বলছে।
সেখানে আগুন নেভানোর কাজ চলছে। ধ্বংসস্তুপে তল্লাশিও এখনো শেষ হয়নি।আবদুল্লাহ আল আরেফীন বলেন, কারখানাটির ভেতরে বিভিন্ন রাসায়নিকসহ দাহ্যপদার্থ মজুত থাকায় আগুন নিয়ন্ত্রণে হিমশিম খেতে হয়েছে। ভবনটিতে ফাটল ধরায় আরও সতর্কতার সঙ্গে কাজ করতে হয়েছে।