
পেকুয়ায় বাঁশের সাকোই পারাপারের একমাত্র ভরসা বীর মুক্তিযোদ্ধা রমিজ উদ্দিন আহমদ সড়কের। পাহাড় থেকে নেমে আসা প্রচন্ড স্রোতের আঘাতে উপজেলার টৈটং ইউনিয়নের সোনাইছড়ি ঢালার মুখ-হাজী বাজার সড়ক বিলীন হয়েছে। বৃষ্টির পানির ধাক্কায় সড়কটির মাঝেরপাড়া পয়েন্টে বিধ্বস্ত হয়েছে প্রায় ১ চেইন। লোকালয়ে প্রবেশ করেছে স্রোতের পানি।
এ সময় টইটং ইউনিয়নের পূর্ব সোনাইছড়ি রমিজপাড়াসহ অন্তত ৬ টি গ্রাম পানিতে প্লাবিত হয়েছে। এটি টইটংয়ের যাতায়াতের প্রধান গ্রামীণ সড়ক। সোনাইছড়ি ঢালারমুখ সড়ক নামে পরিচিত ছিল সড়কটি। তবে কয়েক বছর আগে সড়কটির নতুন নামকরণ করা হয়। বীর মুক্তিযোদ্ধা ও টইটং ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান রমিজ উদ্দিন আহমদের নামে নামকরণ করা হয় বীর মুক্তিযোদ্ধা ‘রমিজ উদ্দিন আহমদ সড়ক’।
কয়েকদিন আগে অতিবৃষ্টিতে সৃষ্ট বন্যায় রমিজ উদ্দিন আহমদ সড়কের মাঝেরপাড়ার নিকটে প্রায় বিলীন হয়েছে ১ চেইন সড়ক। এতে টইটং ইউনিয়নের হারকিল্লার ধাঁরা, রমিজ পাড়া, মাঝের পাড়া, দরগা মোড়া, সোনাইছড়ি গ্রামের প্রায় পাঁচ হাজার মানুষের চলাচলের একমাত্র ভরসা হয়ে পড়েছে বাঁশের সাঁকো।
পাহাড়ি জনপদের এসব মানুষের যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম ঢালারমুখ-হাজী বাজার সড়ক। এতে চলাচলে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন ছয় গ্রামের মানুষ। সরেজমিনে দেখা যায়, মাঝের পাড়া গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে সোনাইছড়ির পাহাড়ি ছড়া।
ছড়ার ওপর রয়েছে একটি সেতু। অতিবৃষ্টির ফলে পাহাড়ের প্রবল ঢলের পানি ছড়ায় কানায় কানায় ভরপূর হয়। এতে সেতুর দক্ষিণ পাশের রাস্তায় তীব্র ভাঙন দেখা দেয়। ঢলের প্রবল স্রোতে ওই রাস্তার ভাঙন দুইশো মিটার দৈর্ঘ্যের খাদে পরিণত হয়। তাই জনসাধারণের চলাচলের সুবিধার্থে স্থানীয় বাসিন্দারা ভাঙনের ওপর বাঁশ-গাছ দিয়ে সাঁকো বসিয়েছে।
এ সাঁকো দিয়ে পারাপার করে গন্তব্যে যাচ্ছেন মানুষ। তবে সাঁকো পারাপারে নারী-শিশু ও বয়স্কদের অসুবিধা হচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দা মোহাম্মদ পারভেছ বলেন, ওই পাহাড়ের সাধারণ মানুষ সবজি, লাকড়ি,পানসহ নানা কৃষিজ পণ্য, বনজ সম্পদ আহরণ করে।
এ সড়ক দিয়ে হাট-বাজারে নিয়ে বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করে। তাছাড়া দু’টি নূরানী মাদ্রাসা ও মসজিদ-মক্তবে যাতায়াতে এ সড়ক ব্যবহার করা হয়। সড়কের অংশটি বানের পানিতে বিলীন হয়ে যাওয়ায় সাধারণ মানুষ ভোগান্তি পোহাচ্ছেন। টৈটং ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্য মো. শাহাবুদ্দিন বলেন, এ সড়ক বিলীন হওয়ায় বর্তমানে পাঁচটি গ্রামের হাজার হাজার মানুষের যোগাযোগ ব্যবস্থা চরমভাবে ব্যহত হচ্ছে।
সড়কটি দ্রুত সংস্কারে আমি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি আকর্ষণ করছি। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) পেকুয়া উপজেলা প্রকৌশলী কমল কান্তি পাল বলেন, সড়কটির ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ণয় করা হয়েছে। এটি দ্রুত সংস্কারে জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। পেকুয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম বলেন, জনসাধারণের দুর্দশা লাঘবে অতিবৃষ্টির পানিতে বিলীন হয়ে যাওয়া সড়কটি দ্রুত মেরামতের উদ্যোগ নেওয়া হবে।