
ভারতে করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় স্টেরয়েড ওষুধ ডেক্সামেথাসন ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছে দেশটির সরকার। আজ শনিবার ঝুঁকিতে থাকা রোগীদের চিকিৎসায় স্বল্পমূল্যের এ ওষুধটি ব্যবহারের অনুমতি দেয় দেশটির কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানায়, প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস আক্রান্ত মাঝারি ও গুরুতর রোগীদের চিকিৎসায় মিথাইলপ্রেডনিসোলনের পরিবর্তে ডেক্সামেথাসন ওষুধ ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
সম্প্রতি ব্রিটেনের এক গবেষণায় দেখা যায়, করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগীদের ডেক্সামেথাসন ওষুধ দেওয়ার পর গুরতর রোগীরা সুস্থ হয়ে উঠছেন। অক্সিজেন সাপোর্টে থাকা রোগীদেরও শ্বাস গ্রহণে সমস্যা হচ্ছে না। বিজ্ঞানীরা একে জীবন রক্ষাকারী ওষুধ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) ডেক্সামেথাসন ওষুধের উৎপাদন বাড়ানোর তাগিদ দেয়।
শুধু করোনাভাইরাসই নয়, আর্থারাইটিসের মতো রোগেও কার্যকর উপশম দেয় এই স্টেরয়েড ওষুধটি
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনাভাইরাস আক্রান্ত প্রতি ২০ জন রোগীর মধ্যে মাত্র একজনের হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার প্রয়োজন পড়ে। বাকি ১৯ জন বাসায় থেকেই সুস্থ হয়ে উঠেন। আবার হাসপাতালে যাদের ভর্তি হতে হয় তারাও বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সুস্থ হয়ে উঠেন। তবে কারো কারো সংক্রমণের মাত্রা এত বেশি থাকে যে, তাদের অক্সিজেন ও ভেন্টিলেশন সাপোর্ট দিতে হয়। এসব উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ রোগীদের চিকিৎসায়ই ডেক্সমেথাসন ওষুধের কার্যকারী সাফল্য পাওয়া গেছে।
বিবিসি এক প্রতিবেদনে জানায়, অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির একদল গবেষক হাসপাতালে ভর্তি ২ হাজার করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগীদের শরীরে পরীক্ষামূলকভাবে ডেক্সামেথাসন ওষুধ প্রয়োগ করে। পরীক্ষার ফলাফলে দেখা যায়, ভেন্টিলেটারে থাকা রোগীদের মৃত্যুর ঝুঁকি এক তৃতীয়াংশ কমে যায়। আর যারা অক্সিজেন সাপোর্টে ছিলেন তাদের ক্ষেত্রে মৃত্যুর হার এক পঞ্চমাংশ কমে যায়।
আন্তর্জাতিক জরিপ সংস্থা ওয়ার্ল্ডোমিটারের দেওয়া তথ্য অনুসারে, নভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্তের দিক দিয়ে গোটা বিশ্বের মধ্যে চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে ভারত। দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৫ লাখ ২৭ হাজারের বেশি মানুষ প্রাণঘাতী এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। সংক্রমিত হয়ে মারা গেছেন ১৬ হাজার ৮৮ জন। চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে উঠেছেন প্রায় ৩ লাখ ৯ হাজার জন।