
নিউজ ডেস্ক :
কক্সবাজারে অদম্য গতিতে ছুটছে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা। শেষ ১৯দিনের পরিসংখ্যান দেখলেই বোঝা যায় কি ভয়াবহ অবস্থা কক্সবাজারের। গত ৫ থেকে ২২মে পর্যন্ত মাত্র ১৮ দিনেই জেলায় করোনায় আক্রান্ত হয়েছে ২৫৯ জন।যেখানে ২ এপ্রিল থেকে ২২মে (৫২তম) দিন পর্যন্ত জেলায় মোট করোনা রোগীর সংখ্যা ২১ রোহিঙ্গা সহ ৩১৫ জন। যা বেড়েছে শেষ ১৯ দিনেই।
এর মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় নতুন করে শনাক্ত হয়েছে আরও ৩৩ করোনা রোগী। শনিবার কক্সবাজার মেডিকেল কলেজে স্থাপিত করোনা ল্যাবে গত ২৪ ঘন্টায় পরীক্ষা করা ২৫৮টি নমুনার মধ্যে জেলায় ৩৩টির রিপোর্ট পজেটিভ আসেে।তবে এদিন রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ১৪টি রিপোর্টই নেগেটিভ আসে।
এনিয়ে জেলায় ৫৩ তম দিনে করোনা রোগীর সংখ্যা দাড়াল ২১ রোহিঙ্গা সহ মোট ৩৪৮ জন।এর মধ্যে মাত্র শেষ ১৯দিনেই জেলায় করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ২১ জন সহ ২৯২ জন।বিষয়টি কক্সবাংলাকে শনিবার বিকালে নিশ্চিত করেছেন মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. অনুপম বড়ুয়া এবং আরআরঅরসি‘র স্বাস্থ্য সমন্বয়কারী ডা.আবু তোহা।
ডা. অনুপম বড়ুয়া জানান, কক্সবাজার মেডিকেল কলেজের করোনা ল্যাবে শনিবার ২৫৮ জনের শরীরের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এর মধ্যে নতুন ৩৯ জনের শরীরে করোনাভাইরাসের অস্তিত্ব ধরা পড়ে। এর মধ্যে জেলায় নতুন ৩৩ জনের করোনা পজিটিভ পাওয়া গেছে।এছাড়া সাতকানিয়ার-৪ এবং লোহাগাড়ার ২ জন নতুন পজিটিভ অছেন। বাকি ৬ জন ফলোআপ।পূর্বের আক্রান্ত (রামুর-৬ জন)। দ্বিতীয়বার পরীক্ষা করেও তাদের শরীরে করোনা পজিটিভ আসেন।
আক্রান্তদের মধ্যে সদরের ১২ জন,মহেশখালীর-৯জন,উখিয়ার-৫জন,পেকুয়ার ৩ জন,রামুর-২ জন এবং টেকনাফের ২জন। আর কক্সবাজার জেলায় ৫৩ তম দিনে এই ৩৩ জনকে নিয়ে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ালো ২১ রোহিঙ্গা সহ মোট ৩৪৮ জন।এদিকে শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন (আরআরআরসি) কার্যালয়ের প্রধান স্বাস্থ্য সমন্বয়কারী ডা.আবু তোহা এম আর এইচ ভুঁইয়া কক্সবাংলাকে জানান,শনিবার রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ১৪টি পরীক্ষার মধ্যে সবকটিই নেগেটিভ আসে।অর্থাত এদিন কোন রোহিঙ্গারই করোনায় আক্রান্ত হননি।তবে এক পুরাতন রোগী পুনরায় করোনা পজিটিভ আসে।
এর ফলে ২৩ মে পর্যন্ত রোহিঙ্গা ক্যাম্পে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ২১ জনেই বহাল থাকল।জানা গেছে, কক্সবাজার জেলায় সবচেয়ে আক্রান্ত বেশি চকরিয়া উপজেলায়। এখানে মোট আক্রান্ত ১০৫ জন। এছাড়াও দ্বিতীয় অবস্থানে সদর উপজেলা ১০০ জন। আক্রান্তের দিক থেকে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে উখিয়া ।
এ উপজেলায় এখন পর্যন্ত আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছে ৪২ জন।এর পরে রয়েছে পেকুয়ায় ৩২ জন,মহেশখালীতে ২৭ জন,টেকনাফে ১১ জন,রামুতে ৮ জন,কুতুবদিয়ায় ২ জন।এছাড়া শরনার্থী শিবিরের রোহিঙ্গা রয়েছে ২১ জন।আজ ২৩মে পর্যন্ত করোনা কেড়ে নিয়েছে ৪ জনের প্রাণ।
আর রামু ও চকরিয়া আইসোলেশন হাসপাতাল থেকে করোনায় সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৫৫জন।স্বাস্থ্যসেবা সংশ্লিষ্ট ও সচেতন ব্যক্তিদের মন্তব্য- বিধি-নিষেধ অমান্য করে এভাবে ভিড় করে কেনাকাটার জন্য মানুষের মাঝে দ্রুত করোনাভাইরাসের বিস্তার ঘটছে।কক্সবাজার শহরসহ বিভিন্ন স্থানে জামাকাপড়, জুতা ও কসমেটিকসের দোকানে মহিলা-পুরুষরা ভিড় করে ঈদের কেনাকাটা করছেন। এ কারণে জেলায় ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার আশঙ্কাই বেশি।